Al-Hajj

Change Language
Change Surah
Change Recitation

Bengali: Zohurul Hoque

Play All
# Translation Ayah
1 ওহে মানবগোষ্ঠী! তোমাদের প্রভুকে ভয়শ্রদ্ধা করো। নিঃসন্দেহ ঘড়িঘন্টার ঝাঁকুনি এক ভয়ংকর ব্যাপার। يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمْ إِنَّ زَلْزَلَةَ السَّاعَةِ شَيْءٌ عَظِيمٌ
2 সেইদিন যখন তোমরা তা দেখবে, -- প্রত্যেক স্তন্যদাত্রী ভুলে যাবে যাকে সে স্তন্য দিচ্ছিল, আর প্রত্যেক গর্ভবতী তার গর্ভপাত করবে, আর তুমি দেখতে পাবে মানুষকে নেশাগ্রস্ত, অথচ তারা মাতাল নয়, বস্তুতঃ আল্লাহ্‌র শাস্তি হচ্ছে বড় কঠোর। يَوْمَ تَرَوْنَهَا تَذْهَلُ كُلُّ مُرْضِعَةٍ عَمَّا أَرْضَعَتْ وَتَضَعُ كُلُّ ذَاتِ حَمْلٍ حَمْلَهَا وَتَرَى النَّاسَ سُكَارَى وَمَا هُم بِسُكَارَى وَلَكِنَّ عَذَابَ اللَّهِ شَدِيدٌ
3 আর মানুষদের মধ্যে এমনও আছে যে কোনো জ্ঞান না রেখেই আল্লাহ্ সন্বন্ধে বিতর্ক করে, আর সে অনুসরণ করে প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তানকে, -- وَمِنَ النَّاسِ مَن يُجَادِلُ فِي اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّبِعُ كُلَّ شَيْطَانٍ مَّرِيدٍ
4 যার বিরুদ্ধে লিখে রাখা হয়েছে যে যে-কেউ তাকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে সে তবে অবশ্যই তাকে বিপথে চালিত করবে এবং তাকে চালিয়ে নেবে জ্বলন্ত আগুনের শাস্তির দিকে। كُتِبَ عَلَيْهِ أَنَّهُ مَن تَوَلَّاهُ فَأَنَّهُ يُضِلُّهُ وَيَهْدِيهِ إِلَى عَذَابِ السَّعِيرِ
5 ওহে মানবগোষ্ঠী! তোমরা যদি পুনরুত্থান সন্বন্ধে সন্দেহের মধ্যে থাক, তাহলে আমরা তো তোমাদের সৃষ্টি করেছি মাটি থেকে, তারপর রক্তপিন্ড থেকে তারপর মাংসের তাল থেকে -- গঠনে সুসমঞ্জস ও সামঞ্জস্যবিহীন, যেন আমরা তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট করতে পারি। আর যাকে আমরা ইচ্ছা করি তাকে মাতৃগর্ভে থাকতে দিই নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত, তারপর তোমাদের বের ক’রে আনি শিশুরূপে, তারপর যেন তোমরা তোমাদের পূর্ণজীবনে পৌঁছুতে পার। আর তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ মৃত্যুমুখে পতিত হয় আর তোমাদের মধ্যে কাউকে আনা হয় জীবনের অধমতম দশায় যার ফলে জ্ঞানলাভের পরে সে কিছুই না-জানা হয়। আর তুমি পৃথিবীকে দেখতে পাচ্ছ অনুর্বর, তারপর যখন আমরা তাতে বৃষ্টি বর্ষণ করি, তখন তা স্পন্দিত হয় ও ফোলে ওঠে, আর উৎপন্ন করে হরেক রকমের সুন্দর শাকসবজি। يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِن كُنتُمْ فِي رَيْبٍ مِّنَ الْبَعْثِ فَإِنَّا خَلَقْنَاكُم مِّن تُرَابٍ ثُمَّ مِن نُّطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ مِن مُّضْغَةٍ مُّخَلَّقَةٍ وَغَيْرِ مُخَلَّقَةٍ لِّنُبَيِّنَ لَكُمْ وَنُقِرُّ فِي الْأَرْحَامِ مَا نَشَاء إِلَى أَجَلٍ مُّسَمًّى ثُمَّ نُخْرِجُكُمْ طِفْلًا ثُمَّ لِتَبْلُغُوا أَشُدَّكُمْ وَمِنكُم مَّن يُتَوَفَّى وَمِنكُم مَّن يُرَدُّ إِلَى أَرْذَلِ الْعُمُرِ لِكَيْلَا يَعْلَمَ مِن بَعْدِ عِلْمٍ شَيْئًا وَتَرَى الْأَرْضَ هَامِدَةً فَإِذَا أَنزَلْنَا عَلَيْهَا الْمَاء اهْتَزَّتْ وَرَبَتْ وَأَنبَتَتْ مِن كُلِّ زَوْجٍ بَهِيجٍ
6 এটি এই জন্য যে আল্লাহ্ -- তিনিই চিরসত্য, আর তিনিই তো মৃতকে জীবিত করেন, আর তিনিই সব কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান, ذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَقُّ وَأَنَّهُ يُحْيِي الْمَوْتَى وَأَنَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
7 আর এই জন্য যে ঘড়িঘন্টা আসন্ন, -- এতে কোনো সন্দেহ নেই, আর যেহেতু আল্লাহ্ পুনরুত্থিত করবেন তাদের যারা কবরের ভেতরে রয়েছে। وَأَنَّ السَّاعَةَ آتِيَةٌ لَّا رَيْبَ فِيهَا وَأَنَّ اللَّهَ يَبْعَثُ مَن فِي الْقُبُور
8 আর মানুষদের মধ্যে এমনও আছে যে আল্লাহ্ সন্বন্ধে বিতর্ক করে কোনো জ্ঞান না রেখে আর কোনো পথনির্দেশ ছাড়া আর কোনো দীপ্তিদায়ক গ্রন্থ ব্যতিরেকে, -- وَمِنَ النَّاسِ مَن يُجَادِلُ فِي اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَلَا هُدًى وَلَا كِتَابٍ مُّنِيرٍ
9 তার ঘাড় ফিরিয়ে, যাতে সে বিপথে চালাতে পারে আল্লাহ্‌র পথ থেকে। তার জন্য এই দুনিয়াতে রয়েছে লাঞ্ছনা, আর কিয়ামতের দিনে আমরা তাকে আস্বাদন করাব জ্বলা-পোড়ার শাস্তি। ثَانِيَ عِطْفِهِ لِيُضِلَّ عَن سَبِيلِ اللَّهِ لَهُ فِي الدُّنْيَا خِزْيٌ وَنُذِيقُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَذَابَ الْحَرِيقِ
10 ''এ তার জন্য যা তোমার হাত দুখানা আগবাড়িয়েছে, আর আল্লাহ্ তো তাঁর বান্দাদের প্রতি একটুও অন্যায়কারী নন।’’ ذَلِكَ بِمَا قَدَّمَتْ يَدَاكَ وَأَنَّ اللَّهَ لَيْسَ بِظَلَّامٍ لِّلْعَبِيدِ
11 আর লোকদের মধ্যে এমনও আছে যে আল্লাহ্‌র উপাসনা করে কিনারায় রয়ে, ফলে যদি তার প্রতি ভাল কিছু ঘটে সে তাতে সন্তষ্ট হয়, কিন্তু তার প্রতি যদি বিপর্যয় ঘটে সে তার মুখ ফিরিয়ে ঘুরে যায় -- সে ইহকাল হারায় আর পরকালও। এটিই তো এক সুস্পষ্ট ক্ষতি। وَمِنَ النَّاسِ مَن يَعْبُدُ اللَّهَ عَلَى حَرْفٍ فَإِنْ أَصَابَهُ خَيْرٌ اطْمَأَنَّ بِهِ وَإِنْ أَصَابَتْهُ فِتْنَةٌ انقَلَبَ عَلَى وَجْهِهِ خَسِرَ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةَ ذَلِكَ هُوَ الْخُسْرَانُ الْمُبِينُ
12 সে আল্লাহ্‌কে ছেড়ে দিয়ে তাকে ডাকে যে তার ক্ষতিসাধন করতে পারে না আর যে তার উপকারও করে না। এই হচ্ছে সুদূর বিপথগমন। يَدْعُو مِن دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَضُرُّهُ وَمَا لَا يَنفَعُهُ ذَلِكَ هُوَ الضَّلَالُ الْبَعِيدُ
13 সে তাকে ডাকে যার ক্ষতিসাধন তার উপকারের চাইতে বেশী নিকটবর্তী। কত নিকৃষ্ট অভিভাবক ও কত মন্দ এ সহচর? يَدْعُو لَمَن ضَرُّهُ أَقْرَبُ مِن نَّفْعِهِ لَبِئْسَ الْمَوْلَى وَلَبِئْسَ الْعَشِيرُ
14 যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করছে আল্লাহ্ তাদের অবশ্যই প্রবেশ করাবেন স্বর্গোদ্যানে যার নিচ দিয়ে বয়ে চলেছে ঝরনারাজি। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ যা ইচ্ছা করেন তাই করে থাকেন। إِنَّ اللَّهَ يُدْخِلُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ إِنَّ اللَّهَ يَفْعَلُ مَا يُرِيدُ
15 যেজন ভাবে যে আল্লাহ্ তাঁকে ইহলোকে ও পরলোকে কখনই সাহায্য করবেন না, সে তবে আকাশের দিকে তোলার উপায় খুঁজুক, তারপর সে কেটে ফেলুক, তখন সে দেখুক তার পরিকল্পনা তা বিদূরিত করে কি না যাতে সে আক্রোশ বোধ করে। مَن كَانَ يَظُنُّ أَن لَّن يَنصُرَهُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ فَلْيَمْدُدْ بِسَبَبٍ إِلَى السَّمَاء ثُمَّ لِيَقْطَعْ فَلْيَنظُرْ هَلْ يُذْهِبَنَّ كَيْدُهُ مَا يَغِيظُ
16 আর এইভাবে আমরা এটি অবতারণ করেছি -- সুস্পষ্ট নিদর্শন, আর অবশ্য আল্লাহ্‌পরিচালনা করেন তাকে যে কামনা করে। وَكَذَلِكَ أَنزَلْنَاهُ آيَاتٍ بَيِّنَاتٍ وَأَنَّ اللَّهَ يَهْدِي مَن يُرِيدُ
17 নিঃসন্দেহ যারা ঈমান এনেছে আর যারা ইহুদী মত পোষণ করে, আর সাবেঈন ও খ্রীষ্টান ও মাজুস, এবং যারা অংশী দাঁড় করায়, -- আল্লাহ্ নিঃসন্দেহ তাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন কিয়ামতের দিনে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সমস্ত কিছুরই সাক্ষ্যদাতা। إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَالَّذِينَ هَادُوا وَالصَّابِئِينَ وَالنَّصَارَى وَالْمَجُوسَ وَالَّذِينَ أَشْرَكُوا إِنَّ اللَّهَ يَفْصِلُ بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدٌ
18 তুমি কি দেখ না যে নিশ্চয় আল্লাহ্ -- তাঁরই প্রতি সিজদা করে যারাই আছে মহাকাশমন্ডলীতে ও যারা আছে পৃথিবীতে, আর সূর্য ও চন্দ্র ও তারকারাজি এবং পাহাড়-পর্বত ও গাছপালা, আর জীবজন্ত ও বহুসংখ্যক লোকজন? আর অনেক আছে যাদের উপরে শাস্তি ন্যায়সংগত হয়েছে। আর যাকে আল্লাহ্ লাঞ্ছিত করেন তার জন্য তবে সম্মানদানের কেউ নেই। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ যা ইচ্ছা করেন তাই করে থাকেন। أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يَسْجُدُ لَهُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَمَن فِي الْأَرْضِ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ وَالنُّجُومُ وَالْجِبَالُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَابُّ وَكَثِيرٌ مِّنَ النَّاسِ وَكَثِيرٌ حَقَّ عَلَيْهِ الْعَذَابُ وَمَن يُهِنِ اللَّهُ فَمَا لَهُ مِن مُّكْرِمٍ إِنَّ اللَّهَ يَفْعَلُ مَا يَشَاء
19 এরা হচ্ছে দুই প্রতিপক্ষ যারা তাদের প্রভু সন্বন্ধে বিতর্ক করে। তারপর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের জন্যে আগুনের থেকে পোশাক তৈরি করা হয়েছে। তাদের মাথার উপর থেকে ফুটন্ত পানি ঢালা হবে, هَذَانِ خَصْمَانِ اخْتَصَمُوا فِي رَبِّهِمْ فَالَّذِينَ كَفَرُوا قُطِّعَتْ لَهُمْ ثِيَابٌ مِّن نَّارٍ يُصَبُّ مِن فَوْقِ رُؤُوسِهِمُ الْحَمِيمُ
20 এর দ্বারা গলে যাবে যা কিছু আছে তাদের পেটের ভেতরে আর চামড়াটাও। يُصْهَرُ بِهِ مَا فِي بُطُونِهِمْ وَالْجُلُودُ
21 আর তাদের জন্য রয়েছে লোহার চাবুক। وَلَهُم مَّقَامِعُ مِنْ حَدِيدٍ
22 যতবার তারা চাইবে এ থেকে বেরিয়ে আসতে -- জ্বালাযন্ত্রণা থেকে -- তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে তারই মধ্যে, আর ''জ্বলে পোড়ার যন্ত্রণা আস্বাদ করো।’’ كُلَّمَا أَرَادُوا أَن يَخْرُجُوا مِنْهَا مِنْ غَمٍّ أُعِيدُوا فِيهَا وَذُوقُوا عَذَابَ الْحَرِيقِ
23 যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করছে আল্লাহ্ অবশ্যই তাদের প্রবেশ করাবেন স্বর্গোদ্যান সমূহে যাদের নিচ দিয়ে বয়ে চলে ঝরনারাজি, সেখানে তাদের ভূষিত করা হবে সোনার কংকণ ও মণি-মুক্তো দিয়ে। আর সেখানে তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ হবে রেশমের। إِنَّ اللَّهَ يُدْخِلُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ يُحَلَّوْنَ فِيهَا مِنْ أَسَاوِرَ مِن ذَهَبٍ وَلُؤْلُؤًا وَلِبَاسُهُمْ فِيهَا حَرِيرٌ
24 আর তাদের পরিচালিত করা হয়েছে পবিত্র বাক্যালাপের প্রতি, আর তাদের চালিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রশংসিত পথে। وَهُدُوا إِلَى الطَّيِّبِ مِنَ الْقَوْلِ وَهُدُوا إِلَى صِرَاطِ الْحَمِيدِ
25 নিঃসন্দেহ যারা অবিশ্বাস পোষণ করে আর ঠেকিয়ে রাখে আল্লাহ্‌র পথ থেকে ও পবিত্র মসজিদ থেকে যাকে আমরা বানিয়েছি সকল মানুষের জন্য সমানভাবে, -- সেখানকার বাসিন্দার ও বহিরাগতের জন্য। আর যে কেউ সেখানে অন্যায়ভাবে ধূর্তামি করতে চায় তাকে আমরা আস্বাদ করার মর্মন্তদ শাস্তি থেকে। إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَيَصُدُّونَ عَن سَبِيلِ اللَّهِ وَالْمَسْجِدِ الْحَرَامِ الَّذِي جَعَلْنَاهُ لِلنَّاسِ سَوَاء الْعَاكِفُ فِيهِ وَالْبَادِ وَمَن يُرِدْ فِيهِ بِإِلْحَادٍ بِظُلْمٍ نُذِقْهُ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ
26 আর স্মরণ করো! আমরা ইব্রাহীমের জন্য গৃহের স্থান স্থির করে দিয়েছিলাম এই বলে -- ''আমার সঙ্গে কোনো-কিছুকে অংশী করো না, আর আমার গৃহকে পবিত্র করো তওয়াফকারীদের জন্য এবং দন্ডায়মানদের ও রুকু-সিজদা-কারীদের জন্য।’’ وَإِذْ بَوَّأْنَا لِإِبْرَاهِيمَ مَكَانَ الْبَيْتِ أَن لَّا تُشْرِكْ بِي شَيْئًا وَطَهِّرْ بَيْتِيَ لِلطَّائِفِينَ وَالْقَائِمِينَ وَالرُّكَّعِ السُّجُودِ
27 আর লোকদের মধ্যে হজের কথা ঘোষণা ক’রে দাও, তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে আর প্রত্যেক শীর্ণ উটের উপরে, প্রত্যেক দূর-দুরান্ত দেশ থেকে, -- وَأَذِّن فِي النَّاسِ بِالْحَجِّ يَأْتُوكَ رِجَالًا وَعَلَى كُلِّ ضَامِرٍ يَأْتِينَ مِن كُلِّ فَجٍّ عَمِيقٍ
28 যাতে তারা প্রত্যক্ষ করে তাদের জন্য উপকারসমূহ, আর যেন তারা আল্লাহ্‌র নাম স্মরণ করতে পারে নির্ধারিত দিনগুলোতে চতুস্পদ গবাদি-পশুদের উপরে যেগুলো দিয়ে তিনি তাদের জীবিকা দিয়েছেন, তারপর যেন তোমরা তা থেকে খেতে পরো এবং দুঃস্থ ও নিঃস্বকে খাওয়াতে পারো। لِيَشْهَدُوا مَنَافِعَ لَهُمْ وَيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ فِي أَيَّامٍ مَّعْلُومَاتٍ عَلَى مَا رَزَقَهُم مِّن بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ فَكُلُوا مِنْهَا وَأَطْعِمُوا الْبَائِسَ الْفَقِيرَ
29 তারপর তারা সমাধা করুক তাদের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, আর তাদের মানতগুলো তারা পূর্ণ করুক, আর তারা তওয়াফ করুক এই প্রাচীন গৃহের। ثُمَّ لْيَقْضُوا تَفَثَهُمْ وَلْيُوفُوا نُذُورَهُمْ وَلْيَطَّوَّفُوا بِالْبَيْتِ الْعَتِيقِ
30 এইটিই। আর যে কেউ আল্লাহ্‌র অনুষ্ঠানগুলোর সম্মান করে তাহলে সেটি তার প্রভুর কাছে তার জন্যে উত্তম। আর গবাদি- পশু তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে সে-সব ব্যতীত যা তোমাদের কাছে বিবৃত করা হয়েছে, সুতরাং তোমরা দেবদেবীর কদর্যতা পরিহার করো এবং বর্জন করো মিথ্যা কথাবার্তা, -- ذَلِكَ وَمَن يُعَظِّمْ حُرُمَاتِ اللَّهِ فَهُوَ خَيْرٌ لَّهُ عِندَ رَبِّهِ وَأُحِلَّتْ لَكُمُ الْأَنْعَامُ إِلَّا مَا يُتْلَى عَلَيْكُمْ فَاجْتَنِبُوا الرِّجْسَ مِنَ الْأَوْثَانِ وَاجْتَنِبُوا قَوْلَ الزُّورِ
31 আল্লাহ্‌র প্রতি একনিষ্ঠ হয়ে, তাঁর সঙ্গে কোনো অংশী আরোপ না ক’রে। আর যে কেউ আল্লাহ্‌র সঙ্গে অংশী দাঁড় করায় সে যেন তাহলে আকাশ থেকে পড়ল, তখন পাখিরা তাকে ছোঁ মেরে নিয়ে যায়, অথবা বায়ুপ্রবাহ তাকে উড়িয়ে নিয়ে যায় এক দূরবর্তী স্থানে। حُنَفَاء لِلَّهِ غَيْرَ مُشْرِكِينَ بِهِ وَمَن يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَكَأَنَّمَا خَرَّ مِنَ السَّمَاء فَتَخْطَفُهُ الطَّيْرُ أَوْ تَهْوِي بِهِ الرِّيحُ فِي مَكَانٍ سَحِيقٍ
32 এইটিই। আর যে কেউ আল্লাহ্‌র নিদর্শনসমূহকে সম্মান করে সেটি তাহলে নিশ্চয়ই হৃদয়ের ধর্মনিষ্ঠা থেকে উদ্ভূত। ذَلِكَ وَمَن يُعَظِّمْ شَعَائِرَ اللَّهِ فَإِنَّهَا مِن تَقْوَى الْقُلُوبِ
33 এদের মধ্যে তোমাদের জন্য উপকার রয়েছে এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত, তারপর তাদের কুরবানির স্থান হচ্ছে প্রাচীন গৃহের সন্নিকটে। لَكُمْ فِيهَا مَنَافِعُ إِلَى أَجَلٍ مُّسَمًّى ثُمَّ مَحِلُّهَا إِلَى الْبَيْتِ الْعَتِيقِ
34 আর প্রত্যেক জাতির জন্য আমরা কুরবানির বিধান দিয়েছি, যেন তারা আল্লাহ্‌র নাম স্মরণ করে চতুস্পদ গবাদি-পশুদের যেগুলো দিয়ে তিনি তাদের রিযেক দিয়েছেন সে-সবের উপরে। বস্তুতঃ তোমাদের উপাস্য একক উপাস্য, সুতরাং তাঁরই নিকট তোমরা আ‌ত্মসমর্পণ করো। আর সুসংবাদ দাও বিনয়নম্রদের, وَلِكُلِّ أُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنسَكًا لِيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ عَلَى مَا رَزَقَهُم مِّن بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ فَإِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ فَلَهُ أَسْلِمُوا وَبَشِّرِ الْمُخْبِتِينَ
35 তাদের যাদের হৃদয় কাঁপতে থাকে যখন আল্লাহ্‌কে স্মরণ করা হয়, আর তাদের উপরে বিপদ ঘটা সত্ত্বেও যারা অধ্যবসায়ী, আর নামায কায়েমকারীদের, আর ওদের আমরা যে রিযেক দিয়েছি তা থেকে যারা খরচ করে থাকে তাদের। الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَالصَّابِرِينَ عَلَى مَا أَصَابَهُمْ وَالْمُقِيمِي الصَّلَاةِ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ
36 আর উট, -- আমরা তাদের তোমাদের জন্য আল্লাহ্‌র নিদর্শনাবলীর অন্যতম বানিয়েছি, তোমাদের জন্য তাদের মধ্যে কল্যাণ নিহিত আছে। সেজন্য সারিবদ্ধ থাকাকালে তাদের উপরে আল্লাহ্‌র নাম উল্লেখ করো, তারপর তারা যখন তাদের পার্শ্বে পড়ে যায় তখন তা থেকে তোমরা খাও, এবং খাওয়াও তুষ্ট-দুঃস্থকে ও ভিক্ষুককে। এইভাবেই আমরা এদের তোমাদের অধীন করে দিয়েছি যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। وَالْبُدْنَ جَعَلْنَاهَا لَكُم مِّن شَعَائِرِ اللَّهِ لَكُمْ فِيهَا خَيْرٌ فَاذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ عَلَيْهَا صَوَافَّ فَإِذَا وَجَبَتْ جُنُوبُهَا فَكُلُوا مِنْهَا وَأَطْعِمُوا الْقَانِعَ وَالْمُعْتَرَّ كَذَلِكَ سَخَّرْنَاهَا لَكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
37 তাদের মাংস কখনো আল্লাহ্‌র কাছে পৌঁছায় না আর তাদের রক্তও নয়, বরং তোমাদের থেকে ধর্মনিষ্ঠাই তাঁর কাছে পৌঁছায়। এইভাবেই তিনি তাদের তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন যেন তোমরা আল্লাহ্‌র শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করতে পারো এজন্য যে তিনি তোমাদের পথ দেখিয়ে দিয়েছেন। আর সুসংবাদ দাও সৎকর্মপরায়ণদের। لَن يَنَالَ اللَّهَ لُحُومُهَا وَلَا دِمَاؤُهَا وَلَكِن يَنَالُهُ التَّقْوَى مِنكُمْ كَذَلِكَ سَخَّرَهَا لَكُمْ لِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ وَبَشِّرِ الْمُحْسِنِينَ
38 নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ দফা রফা করে দেবেন তাদের থেকে যারা ঈমান এনেছে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ ভালবাসেন না প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতককে, অকৃতজ্ঞকে। إِنَّ اللَّهَ يُدَافِعُ عَنِ الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ كُلَّ خَوَّانٍ كَفُورٍ
39 অনুমতি দেওয়া গেল তাদের জন্য যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হচ্ছে, কেননা তারা অত্যাচারিত হয়েছে, আর অবশ্যই আল্লাহ্ তাদের সাহায্য করতে সক্ষম, -- أُذِنَ لِلَّذِينَ يُقَاتَلُونَ بِأَنَّهُمْ ظُلِمُوا وَإِنَّ اللَّهَ عَلَى نَصْرِهِمْ لَقَدِيرٌ
40 যাদের বহিস্কার করা হয়েছে তাদের বাড়িঘর থেকে ন্যায়সঙ্গত কারণ ছাড়াই, শুধু এইজন্য যে তারা বলে -- ''আমাদের প্রভু আল্লাহ্‌’’। আর যদি মানবজাতিকে তাদের এক দলের দ্বারা অন্য দলকে প্রতিহত করার ব্যবস্থা আল্লাহ্‌র না থাকতো তা হলে নিশ্চয়ই বিধবস্ত হয়ে যেত গির্জাগুলো ও মঠগুলি ও উপাসনালয় ও মসজিদ সমূহ যেখানে আল্লাহ্‌র নাম প্রচুরভাবে স্মরণ করা হয়! আর আল্লাহ্ নিশ্চয়ই সাহায্য করেন তাঁকে যে তাঁকে সাহায্য করে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ তো মহাবলীয়ান, মহাশক্তিশালী। الَّذِينَ أُخْرِجُوا مِن دِيَارِهِمْ بِغَيْرِ حَقٍّ إِلَّا أَن يَقُولُوا رَبُّنَا اللَّهُ وَلَوْلَا دَفْعُ اللَّهِ النَّاسَ بَعْضَهُم بِبَعْضٍ لَّهُدِّمَتْ صَوَامِعُ وَبِيَعٌ وَصَلَوَاتٌ وَمَسَاجِدُ يُذْكَرُ فِيهَا اسْمُ اللَّهِ كَثِيراً وَلَيَنصُرَنَّ اللَّهُ مَن يَنصُرُهُ إِنَّ اللَّهَ لَقَوِيٌّ عَزِيزٌ
41 এরাই, -- আমরা যদি এদের পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করি তাহলে এরা নামায কায়েম করবে ও যাকাত আদায় করবে ও সৎকাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর সব কাজের পরিণাম আল্লাহ্‌রই এখতিয়ারে। الَّذِينَ إِن مَّكَّنَّاهُمْ فِي الْأَرْضِ أَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ وَأَمَرُوا بِالْمَعْرُوفِ وَنَهَوْا عَنِ الْمُنكَرِ وَلِلَّهِ عَاقِبَةُ الْأُمُورِ
42 আর যদি তারা তোমাকে প্রত্যাখ্যান করে তবে তাদের আগেও প্রত্যাখ্যান করেছিল নূহের সম্প্রদায় ও 'আদের ও ছামূদের, وَإِن يُكَذِّبُوكَ فَقَدْ كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوحٍ وَعَادٌ وَثَمُودُ
43 আর ইব্রাহীমের সম্প্রদায় এবং লূতের সম্প্রদায়, وَقَوْمُ إِبْرَاهِيمَ وَقَوْمُ لُوطٍ
44 আর মাদিয়ানের বাসিন্দারা, আর মূসাকেও প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল, তথাপি আমি অবিশ্বাসীদের অবকাশ দিয়েছিলাম, তখন আমি তাদের পাকড়াও করলাম, সুতরাং কেমন হয়েছিল আমার শাস্তিদান! وَأَصْحَابُ مَدْيَنَ وَكُذِّبَ مُوسَى فَأَمْلَيْتُ لِلْكَافِرِينَ ثُمَّ أَخَذْتُهُمْ فَكَيْفَ كَانَ نَكِيرِ
45 কাজেকাজেই কত যে জনপদ ছিল, -- আমরা সেটা ধ্বংস করেছি যেহেতু তা অত্যাচারী ছিল, ফলে তা তার ছাদসহ ভেঙ্গে-চুরে রয়েছে, আর কূয়ো পরিত্যক্ত হয়েছে আর সুদৃঢ় প্রাসাদ! فَكَأَيِّن مِّن قَرْيَةٍ أَهْلَكْنَاهَا وَهِيَ ظَالِمَةٌ فَهِيَ خَاوِيَةٌ عَلَى عُرُوشِهَا وَبِئْرٍ مُّعَطَّلَةٍ وَقَصْرٍ مَّشِيدٍ
46 তারা কি তবে দুনিয়াতে ভ্রমণ করে নি যার ফলে তাদের লাভ হয়েছে অন্তঃকরণ যা দিয়ে তারা হৃদয়ঙ্গম করতে পারে অথবা কান যা দিয়ে তারা শুনতে পারে? বস্তুতঃ চোখ তো আদৌ অন্ধ নয়, কিন্তু অন্ধ হচেছ হৃদয় যা রয়েছে বুকের ভেতরে। أَفَلَمْ يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَتَكُونَ لَهُمْ قُلُوبٌ يَعْقِلُونَ بِهَا أَوْ آذَانٌ يَسْمَعُونَ بِهَا فَإِنَّهَا لَا تَعْمَى الْأَبْصَارُ وَلَكِن تَعْمَى الْقُلُوبُ الَّتِي فِي الصُّدُورِ
47 আর তারা তোমাকে শাস্তি ত্বরান্বিত করতে বলে, অথচ আল্লাহ্ তাঁর ওয়াদার কখনো খেলাফ করবেন না। আর নিঃসন্দেহ তোমার প্রভুর কাছে এক দিন তোমরা যা গণনা কর তার এক হাজার বছরের সমান। وَيَسْتَعْجِلُونَكَ بِالْعَذَابِ وَلَن يُخْلِفَ اللَّهُ وَعْدَهُ وَإِنَّ يَوْمًا عِندَ رَبِّكَ كَأَلْفِ سَنَةٍ مِّمَّا تَعُدُّونَ
48 আর কত যে জনবসতি ছিল -- তার জুলুমবাজি সত্ত্বেও আমি তাকে অবকাশ দিয়েছিলাম, তারপর আমি তাকে পাকড়াও করলাম, আর আমারই কাছে প্রত্যাবর্তন। وَكَأَيِّن مِّن قَرْيَةٍ أَمْلَيْتُ لَهَا وَهِيَ ظَالِمَةٌ ثُمَّ أَخَذْتُهَا وَإِلَيَّ الْمَصِيرُ
49 বলো -- ''ওহে মানবজাতি! আমি তো তোমাদের জন্য একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।’’ قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّمَا أَنَا لَكُمْ نَذِيرٌ مُّبِينٌ
50 সেজন্য যারা ঈমান আনবে ও সৎকাজ করবে তাদের জন্য রয়েছে পরিত্রাণ ও সম্মানজনক জীবিকা। فَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ
51 আর যারা আমাদের নির্দেশাবলী বিফল করার চেষ্টা করে তারাই হচ্ছে জ্বলন্ত আগুনের বাসিন্দা। وَالَّذِينَ سَعَوْا فِي آيَاتِنَا مُعَاجِزِينَ أُوْلَئِكَ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ
52 আর তোমার আগে আমরা কোনো রসূল পাঠাই নি আর কোনো নবীও নয় এ ভিন্ন যে যখনি তিনি আকাঙ্খা করেছেন তখন শয়তান তাঁর আকাঙ্খা সম্পর্কে কুমন্ত্রণা দিয়েছে। কিন্তু আল্লাহ্ বাতিল করে দেন শয়তান যেসব কুমন্ত্রণা দেয়, তখন আল্লাহ্ তাঁর নির্দেশাবলী প্রতিষ্ঠিত করেন। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী, وَمَا أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ مِن رَّسُولٍ وَلَا نَبِيٍّ إِلَّا إِذَا تَمَنَّى أَلْقَى الشَّيْطَانُ فِي أُمْنِيَّتِهِ فَيَنسَخُ اللَّهُ مَا يُلْقِي الشَّيْطَانُ ثُمَّ يُحْكِمُ اللَّهُ آيَاتِهِ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
53 যেন শয়তান যে কুমন্ত্রণা দেয় সেটিকে তিনি করতে পারেন একটি পরীক্ষার বিষয় তাদের জন্য যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে, আর যাদের হৃদয় হয়েছে কঠিন। আর অত্যাচারীরা তো নিশ্চয়ই সুদূর প্রসারী বিচ্ছিন্নতায় রয়েছে, -- لِيَجْعَلَ مَا يُلْقِي الشَّيْطَانُ فِتْنَةً لِّلَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ وَالْقَاسِيَةِ قُلُوبُهُمْ وَإِنَّ الظَّالِمِينَ لَفِي شِقَاقٍ بَعِيدٍ
54 আর যেন যাদের জ্ঞান দেওয়া হয়েছে তারা জানতে পারে যে এটি তোমার প্রভুর কাছ থেকে সত্য, কাজেই তারা যেন এতে বিশ্বাস স্থাপন করে আর তাদের হৃদয় যেন তাঁর প্রতি বির্নত হতে পারে। আর নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ তো সহজ-সঠিক পথের দিকে পরিচালক তাদের জন্য যারা ঈমান এনেছে। وَلِيَعْلَمَ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ أَنَّهُ الْحَقُّ مِن رَّبِّكَ فَيُؤْمِنُوا بِهِ فَتُخْبِتَ لَهُ قُلُوبُهُمْ وَإِنَّ اللَّهَ لَهَادِ الَّذِينَ آمَنُوا إِلَى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ
55 আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা এ সন্বন্ধে সন্দেহ করা থেকে বিরত হবে না যতক্ষণ না ঘড়িঘন্টা অতর্কিতে তাদের উপরে এসে পড়ে, অথবা তাদের উপরে এসে পড়ে এক ধ্বংসা‌ত্মক দিনে শাস্তি। وَلَا يَزَالُ الَّذِينَ كَفَرُوا فِي مِرْيَةٍ مِّنْهُ حَتَّى تَأْتِيَهُمُ السَّاعَةُ بَغْتَةً أَوْ يَأْتِيَهُمْ عَذَابُ يَوْمٍ عَقِيمٍ
56 ''আজকের দিনে সর্বাধিনায়কত্ব হচ্ছে আল্লাহ্‌র।’’ তিনি তাদের মধ্যে বিচার করবেন। সুতরাং যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করছে তারাই থাকবে আনন্দময় উদ্যানে। الْمُلْكُ يَوْمَئِذٍ لِّلَّهِ يَحْكُمُ بَيْنَهُمْ فَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ فِي جَنَّاتِ النَّعِيمِ
57 আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে ও আমাদের নির্দেশাবলী প্রত্যাখ্যান করে, তারাই তবে -- তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি। وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِآيَاتِنَا فَأُوْلَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُّهِينٌ
58 আর যারা আল্লাহ্‌র পথে হিজরত করে, তারপর নিহত হয় অথবা মৃত্যু বরণ করে, আল্লাহ্ অবশ্যই তাদের উত্তম জীবনোপকরণ উপভোগ করতে দেবেন। আর নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ -- তিনিই তো জীবিকাদাতাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। وَالَّذِينَ هَاجَرُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ قُتِلُوا أَوْ مَاتُوا لَيَرْزُقَنَّهُمُ اللَّهُ رِزْقًا حَسَنًا وَإِنَّ اللَّهَ لَهُوَ خَيْرُ الرَّازِقِينَ
59 তিনি নিশ্চয়ই তাদের প্রবেশ করাবেন এমন একটি প্রবেশস্থলে যাতে তারা খুশি হবে। আর নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ তো সর্বজ্ঞাতা, অতি অমায়িক। لَيُدْخِلَنَّهُم مُّدْخَلًا يَرْضَوْنَهُ وَإِنَّ اللَّهَ لَعَلِيمٌ حَلِيمٌ
60 এই রকমেই। আর যে প্রতিশোধ লয় যতটা উৎপীড়ন তাকে করা হয়েছিল তার সমপরিমাণে, তারপর তার প্রতি অত্যাচার করা হয়, তাহলে আল্লাহ্ নিশ্চয়ই তাকে সাহায্য করবেন। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ তো পরম ক্ষমাশীল, পরিত্রাণকারী। ذَلِكَ وَمَنْ عَاقَبَ بِمِثْلِ مَا عُوقِبَ بِهِ ثُمَّ بُغِيَ عَلَيْهِ لَيَنصُرَنَّهُ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ لَعَفُوٌّ غَفُورٌ
61 এমন করেই, কেননা আল্লাহ্ রাত্রিকে প্রবেশ করান দিনের মধ্যে আর দিনকে ঢুকান রাতের মধ্যে, আর আল্লাহ্‌ই তো সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। ذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ يُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَأَنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ بَصِيرٌ
62 এ ধরনেই, কেননা নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ -- তিনিই সত্য, আর তাঁকে ছেড়ে দিয়ে তারা যাকে ডাকে তা তো মিথ্যা আর নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ -- তিনিই সমুচ্চ, মহামহিম। ذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَقُّ وَأَنَّ مَا يَدْعُونَ مِن دُونِهِ هُوَ الْبَاطِلُ وَأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْعَلِيُّ الْكَبِيرُ
63 তুমি কি দেখ না যে আল্লাহ্ আকাশ থেকে পাঠান পানি, তখন পৃথিবী সবুজ রঙ ধারণ করে? নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সদাশয় পূর্ণ ওয়াকিবহাল। أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ أَنزَلَ مِنَ السَّمَاء مَاء فَتُصْبِحُ الْأَرْضُ مُخْضَرَّةً إِنَّ اللَّهَ لَطِيفٌ خَبِيرٌ
64 যা কিছু আছে মহাকাশমন্ডলীতে ও যা কিছু আছে পৃথিবীতে সে-সমস্ত তাঁরই। আর নিঃসন্দেহ আল্লাহ্‌, -- তিনিই তো স্বয়ংসমৃদ্ধ, পরম প্রশংসিত। لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ وَإِنَّ اللَّهَ لَهُوَ الْغَنِيُّ الْحَمِيدُ
65 তুমি কি লক্ষ্য কর না যে পৃথিবীতে যা কিছু আছে আল্লাহ্ তা তোমাদের অধীন করেছেন, আর জাহাজগুলোও যা তাঁর নির্দেশে সমুদ্রে বিচরণ করছে। আর তিনি আকাশকে ঠেকিয়ে রাখেন তাঁর অনুমতি ব্যতিরেকে পৃথিবীর উপরে পড়া থেকে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ মানুষদের প্রতি তো পরম স্নেহময়, অফুরন্ত ফলদাতা। أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ سَخَّرَ لَكُم مَّا فِي الْأَرْضِ وَالْفُلْكَ تَجْرِي فِي الْبَحْرِ بِأَمْرِهِ وَيُمْسِكُ السَّمَاء أَن تَقَعَ عَلَى الْأَرْضِ إِلَّا بِإِذْنِهِ إِنَّ اللَّهَ بِالنَّاسِ لَرَؤُوفٌ رَّحِيمٌ
66 আর তিনিই সেইজন যিনি তোমাদের জীবন দান করেছেন, তারপর তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন, তারপর তিনি তোমাদের জীবিত করবেন। নিঃসন্দেহ মানুষগুলো বড় অকৃতজ্ঞ। وَهُوَ الَّذِي أَحْيَاكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيكُمْ إِنَّ الْإِنسَانَ لَكَفُورٌ
67 প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য আমরা নির্ধারিত করে দিয়েছি নিয়ম-কানুন যা তারা পালন করে, সুতরাং তারা যেন তোমার সঙ্গে এই ব্যাপারে বিতর্ক না করে, আর তোমার প্রভুর দিকে আহ্বান করো। নিঃসন্দেহ তুমিই তো রয়েছ সহজ-সঠিক পথের উপরে। لِكُلِّ أُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنسَكًا هُمْ نَاسِكُوهُ فَلَا يُنَازِعُنَّكَ فِي الْأَمْرِ وَادْعُ إِلَى رَبِّكَ إِنَّكَ لَعَلَى هُدًى مُّسْتَقِيمٍ
68 আর যদি তোমার সঙ্গে তারা তর্ক-বিতর্ক করে তবে বল -- ''আল্লাহ ভাল জানেন যা তোমরা করছো।’’ وَإِن جَادَلُوكَ فَقُلِ اللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا تَعْمَلُونَ
69 আল্লাহ্ তোমাদের মধ্যে কিয়ামতের দিনে বিচার-মীমাংসা করে দেবেন যে-সব বিষয়ে তোমরা মতভেদ করছিলে। اللَّهُ يَحْكُمُ بَيْنَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيمَا كُنتُمْ فِيهِ تَخْتَلِفُونَ
70 তুমি কি জান না যে মহাকাশে ও পৃথিবীতে যা-কিছু আছে সে-সবই আল্লাহ্ জানেন? নিঃসন্দেহ এটি আল্লাহর জন্যে সহজ ব্যাপার। أَلَمْ تَعْلَمْ أَنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاء وَالْأَرْضِ إِنَّ ذَلِكَ فِي كِتَابٍ إِنَّ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ
71 তারা আল্লাহকে ছেড়ে দিয়ে যার উপাসনা করে তার জন্য তিনি কোনো দলিল পাঠান নি এবং তাদের কাছে সে-বিষয়ে কোনো জ্ঞানও নেই। আর অন্যায়াচারীদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই। وَيَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِ سُلْطَانًا وَمَا لَيْسَ لَهُم بِهِ عِلْمٌ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِن نَّصِيرٍ
72 আর যখন তদের কাছে আমাদের সুস্পষ্ট নির্দেশাবলী পাঠ করা হয় তখন যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তাদের চেহারাতে তুমি অস্বীকৃতির পরিচয় পাবে। তারা চায় যারা আমাদের বাণীসমূহ তাদের কাছে পড়ে শুনায় তাদের উপরে লাফিয়ে পড়তে। তুমি বল -- ''আমি কি তবে তোমাদের সংবাদ দেব এ-সবের চেয়েও মন্দ কিছুর?’’ আগুন। আল্লাহ্ এটি ওয়াদা করেছেন তাদেব জন্য যারা অবিশ্বাস পোষণ করে। আর কত মন্দ এ গন্তব্যস্থল! وَإِذَا تُتْلَى عَلَيْهِمْ آيَاتُنَا بَيِّنَاتٍ تَعْرِفُ فِي وُجُوهِ الَّذِينَ كَفَرُوا الْمُنكَرَ يَكَادُونَ يَسْطُونَ بِالَّذِينَ يَتْلُونَ عَلَيْهِمْ آيَاتِنَا قُلْ أَفَأُنَبِّئُكُم بِشَرٍّ مِّن ذَلِكُمُ النَّارُ وَعَدَهَا اللَّهُ الَّذِينَ كَفَرُوا وَبِئْسَ الْمَصِيرُ
73 ওহে মানবজাতি! একটি উপমা ছোঁড়া হচ্ছে, কাজেই তা শোনো। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্‌কে ছেড়ে দিয়ে তোমরা যাদের ডাকো তারা কখনও একটি মাছিও সৃষ্টি করতে পারে না যদিও সেজন্য তারা সবাই একত্রিত হয়। আর যদি মাছিটি তাদের কাছ থেকে কিছু নিয়ে যায়, তারা ওর কাছ থেকে সেটি ফিরিয়ে আনতে পারবে না। দুর্বল সেই অণ্বেষণকারী আর অন্বেষিত। يَا أَيُّهَا النَّاسُ ضُرِبَ مَثَلٌ فَاسْتَمِعُوا لَهُ إِنَّ الَّذِينَ تَدْعُونَ مِن دُونِ اللَّهِ لَن يَخْلُقُوا ذُبَابًا وَلَوِ اجْتَمَعُوا لَهُ وَإِن يَسْلُبْهُمُ الذُّبَابُ شَيْئًا لَّا يَسْتَنقِذُوهُ مِنْهُ ضَعُفَ الطَّالِبُ وَالْمَطْلُوبُ
74 তারা আল্লাহ্‌কে মান-সম্মান করে না তাঁর যোগ্য মর্যাদায়। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ তো মহাবলীয়ান, মহাশক্তিশালী। مَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ إِنَّ اللَّهَ لَقَوِيٌّ عَزِيزٌ
75 আল্লাহ্ ফিরিশতাদের মধ্যে থেকে বাণীবাহকদের মনোনীত করেন, এবং মানুষের মধ্যে থেকেও। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। اللَّهُ يَصْطَفِي مِنَ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا وَمِنَ النَّاسِ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ بَصِيرٌ
76 তিনি অবগত আছেন যা-কিছু আছে তাদের সামনে আর যা-কিছু আছে তাদের পেছনে, আর আল্লাহ্‌র কাছেই সব ব্যাপার ফিরিয়ে আনা হয়। يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَإِلَى اللَّهِ تُرْجَعُ الأمُورُ
77 ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা রুকু করো ও সিজদা করো, আর তোমাদের প্রভুর এবাদত করো এবং ভালকাজ করো যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো। يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا ارْكَعُوا وَاسْجُدُوا وَاعْبُدُوا رَبَّكُمْ وَافْعَلُوا الْخَيْرَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُون
78 আর আল্লাহ্‌র পথে জিহাদ করো যেভাবে তাঁর পথে জিহাদ করা কর্তব্য। তিনি তোমাদের মনোনীত করেছেন, তবে তিনি তোমাদের উপরে ধর্মের ব্যাপারে কোনো কাঠিন্য আরোপ করেন নি। তোমাদের পিতৃপুরুষ ইব্রাহীমের ধর্মমত। তিনি তোমাদের নামকরণ করেছেন 'মুসলিম’, -- এর আগেই আর এতেও, যেন এই রসূল তোমাদের জন্য একজন সাক্ষী হতে পারেন এবং তোমরাও জনগণের জন্য সাক্ষী হতে পার। অতএব তোমরা নামায কায়েম করবে ও যাকাত আদায় করবে এবং আল্লাহ্‌কে শক্ত ক’রে ধরে থাকবে। তিনিই তোমাদের অভিভাবক, সুতরাং কত উত্তম এই অভিভাবক এবং কত উত্তম এই সাহায্যকারী! وَجَاهِدُوا فِي اللَّهِ حَقَّ جِهَادِهِ هُوَ اجْتَبَاكُمْ وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّينِ مِنْ حَرَجٍ مِّلَّةَ أَبِيكُمْ إِبْرَاهِيمَ هُوَ سَمَّاكُمُ الْمُسْلِمينَ مِن قَبْلُ وَفِي هَذَا لِيَكُونَ الرَّسُولُ شَهِيدًا عَلَيْكُمْ وَتَكُونُوا شُهَدَاء عَلَى النَّاسِ فَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَاعْتَصِمُوا بِاللَّهِ هُوَ مَوْلَاكُمْ فَنِعْمَ الْمَوْلَى وَنِعْمَ النَّصِيرُ
;